রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:১১ পূর্বাহ্ন
ক্রীড়া ডেস্ক : সিলেট টেস্টে শ্রীলঙ্কার দেওয়া পাহাড়সম ৫১১ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে বিপর্যয়ে পড়ে বাংলাদেশ। তৃতীয় দিনের শেষ বিকেলে ব্যাটিংয়ে নেমে ৩৭ রান তুলতেই সাজঘরে ফিরেছেন টপ অর্ডারের ৫ ব্যাটার। শেষ পর্যন্ত তৃতীয় দিন শেষে দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশ সংগ্রহ করে ৫ উইকেট হারিয়ে ৪৭ রান। চতুর্থ দিনের শুরুতে ব্যাটিংয়ে দ্রুত উইকেট হারিয়ে চাপে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশের হয়ে একাই লড়াই চালিয়ে যান মুমিনুল হক। তার অপরাজিত ৮৭ রানে ভর করে লঙ্কানদের বিপক্ষে হারের ব্যবধান কমিয়েছে টাইগাররা। লঙ্কানদের ৫১১ রানের জবাবে চতুর্থ দিনেই ১৮২ রানেই অলআউট হয়েছে বাংলাদেশ। যার ফলে প্রথম টেস্টে শ্রীলঙ্কা তুলে নিয়েছে ৩৮২ রানের বিশাল জয়।
চতুর্থ দিনের শুরুতে ব্যাটিংয়ে নামেন তৃতীয় দিন শেষে অপরাজিত থাকা মুমিনুল হক ও তাইজুল ইসলাম। তবে দিনের শুরুতেই ভেঙে যায় এই জুটি। ১৫ বলে মাত্র ৬ রান করে কাসুন রাজিতার বলে এলবিডব্লিউয়ের শিকার হয়ে সাজঘরে ফিরে যান তাইজুল ইসলাম। তার বিদায়ে ৫১ রানেই ৬ উইকেট হারায় বাংলাদেশ।
৫১ রানে ৬ উইকেট হারানোর পর জুটি গড়েন মুমিনুল হক ও মেহেদী হাসান মিরাজ। এই জুটিতে ভর করে ৩০ ওভার ২ বলে দলীয় শতক তুলে নেয় বাংলাদেশ। তবে দলীয় শতক পূর্ণ করার পর নিজেদের জুটিকে আর বেশিদূর নিয়ে যেতে পারেননি তারা।
৫০ বলে ৩৩ রান করে রাজতার বলে ধনাঞ্জয়া ডি সিলভার হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে সাজঘরে ফিরে যান মেহেদী হাসান মিরাজ। তার বিদায়ে ভাঙে ৬৬ রানের জুটি।
মিরাজের বিদায়ের পর শরিফুল ইসলামকে নিয়ে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন মুমিনুল হক। ৩৮ ওভার খেলে ৭ উইকেট হারিয়ে ১২৯ রান করে লাঞ্চ বিরতিতে যায় বাংলাদেশ।
বিরতি থেকে ফিরে শরিফুলকে নিয়ে দেখেশুনে খেলতে থাকেন মুমিনুল। লঙ্কানদের বিপক্ষে আজ তিনি তুলে নেন ব্যক্তিগত অর্ধশতক। ১১৫ বলে অর্ধশতক তুলে নেন তিনি।
তবে নিজে অর্ধশতক তুলে নিলেও নিজেদের জুটিকে আর বেশিদূর নিয়ে যেতে পারেননি তিনি। দলীয় ১৬৪ রানে শরিফুল ইসলামের বিদায়ে ৬৪ রানেই ভেঙে যায় এই জুটি। ৪২ বলে ১২ রান করা শরিফুল রাজিতার শিকার হয়ে সাজঘরে ফিরে যান সাজঘরে।
শরিফুলের বিদায়ের পরের বলেই সাজঘরে ফিরে যান খালিদ আহমেদ। রাজিতার বলে উইকেটরক্ষক কুশল মেন্ডিসের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন তিনি। ৯ উইকেট হারানোর পরও দশম উইকেটে নাহিদ রানাকে নিয়ে লড়াই চালিয়ে যেতে থাকেন মুমিনুল। তবে ৮ বলে শূন্য রান করে রাজিতার বিদায়ে ১৮২ রানেই থামে বাংলাদেশের ইনিংস। ৮৭ রান করে অপরাজিত থাকেন মুমিনুল।
এর আগে সিলেট টেস্টের প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশকে ১৮৮ রানে অলআউট করে ৯২ রানের লিড নিয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নামে শ্রীলঙ্কা। কিন্তু তাদের শুরুটা হয়নি। বাংলাদেশি পেসারদের বোলিং তোপে ১১৯ রান তুলতেই ৫ উইকেট হারিয়ে বসেছ তারা। যার ফলে দ্বিতীয় দিন শেষে শ্রীলঙ্কার লিড দাঁড়ায় ২১১ রান। এরপর তৃতীয় দিনে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুতেই উইকেট হারালেও ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা ও কামিন্দু মেন্ডিসের জোড়া সেঞ্চুরিতে বড় লিড পায় শ্রীলঙ্কা।
প্রথম ইনিংসের পর দ্বিতীয় ইনিংসেও জোড়া সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা ও কামিন্দু মেন্ডিস। আর এই সেঞ্চুরি করে বিরল এক রেকর্ড গড়েছেন তারা। কোনো দলের নির্দিষ্ট দুজন ব্যাটার এক টেস্টের দুই ইনিংসেই সেঞ্চুরি পেয়েছেন এমন ঘটনা লাল বলের ইতিহাসে বিরল। সিলেট টেস্টে বাংলাদেশের বিপক্ষে এমন বিরল কীর্তি গড়েছেন ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা ও কামিন্দু মেন্ডিস। তাদের এমন রেকর্ড গড়া সেঞ্চুরিতে ভর করে সিলেট টেস্টে বাংলাদেশকে ৫১১ রানের লক্ষ দেয় শ্রীলঙ্কা।
পাহাড়সম সেই লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে বিপর্যয়ে পড়ে বাংলাদেশ। তৃতীয় দিনের শেষ বিকেলে ব্যাটিংয়ে নেমে ৩৭ রান তুলতেই সাজঘরে ফিরেছেন টপ অর্ডারের ৫ ব্যাটার। শেষ পর্যন্ত তৃতীয় দিন শেষে দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশ সংগ্রহ করে ৫ উইকেট হারিয়ে ৪৭ রান।